প্রিয় পাঠক গ্ণ আপনারা এই আর্টিকেলে চুল গজানোর তেলের নাম এবং চুল পড়া বন্ধ করার উপায় ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারবেন। এবং চুল গজানো তেল কিভাবে ব্যবহার করতে হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাহলে চলুন আমরা আর দেরি না করে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ি।
আপনি কি জানেন কিভাবে চুল গজানো তেল ব্যবহার করতে হয় এবং কি কি নিয়ম মেনে চললে চুল পড়া বন্ধ হয়ে যায় আপনারা এই আর্টিকেলটি পড়লে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
চুল গজানোর তেলের নাম
দেহের পুষ্টির জন্য আমরা যেমন ভিটামিন সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করি, তেমনি চুলের জন্য কিছু নির্দিষ্ট তেল ব্যবহার করতে হয় যা চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং চুল পড়া রোধ করে। বাজারে অনেক ধরনের চুল গজানো তেল পাওয়া যায় যা চুলের জন্য উপকারী। এখানে আমরা কিছু বিশেষ করে চুল গজানো তেলের কথা তুলে ধরবো যা আপনারা ব্যবহার করতে পারেন।
- Delight Olive Oil (Spain)
- Castor Oil
- Trifolin Hair Treatment Oil (Thailand)
- Onion Hair Oil (Herbal)
- Silesia Hair Food Premium Oil (Herbal)
- Expert Hair Care Oil (Indian)
- Hair Glow Oil (Indian)
- Kesh King Oil (Indian)
- Indulekha Oil (Indian)
- Jack Olive Oil (Indian)
- WOW Onion Black Seed Oil (Indian)
- Lotus Onion Hair Oil (Indian)
- Biunique Onion Black Seed Oil (Indian)
- Himalaya Anti Breakage Hair Oil (Indian)
- Amal Hair Oil (Bangladeshi)
- Kachori Hair Oil (Bangladeshi)
- Tibet Hair Oil (Bangladeshi)
- Herbal Oil (Bangladeshi)
আপনি উল্লিখিত তেলগুলি ব্যবহার করতে পারেন, কারণ এগুলি প্রখ্যাত কোম্পানির তৈরি এবং অনেকেই ব্যবহার করে ইতিবাচক ফলাফল পেয়েছেন। চুল পড়া প্রতিরোধের জন্য একটি জনপ্রিয় তেল হল ক্যাস্টর অয়েল।
চুল পড়া বন্ধ করার সেম্পু
এই শ্যাম্পুর গন্ধ খুবই ভালো লেগেছে। এটি অন্যান্য খুশকি নাশক শ্যাম্পুর মত চুলকে রুক্ষ-শুষ্ক করেনি। খুশকি দূর করে এবং চুলকে নরম ও কোমল রাখতে সাহায্য করেছে। ৩ সপ্তাহ ব্যবহারের পর দেখেছি চুল পড়া কমেছে। খুশকি চুল পড়া বাড়ায়, আর এই শ্যাম্পুটি খুশকির বিরুদ্ধে কার্যকর, তাই চুল পড়া কমেছে। বিশ্বব্যাপী এন্টি-ড্যানড্রাফ শ্যাম্পুগুলোতে ব্যবহৃত একটিভ উপাদানগুলোর মধ্যে Zinc Pyrithione বেশ কার্যকর। ক্লিয়ার অ্যান্টি হেয়ারফল শ্যাম্পুর লেবেলে এটি দেখে খুশি হয়েছি। ইউনিলিভার একটি নামকরা প্রতিষ্ঠান, তাই তারা সঠিক মাত্রায় Zinc Pyrithione ব্যবহার করেছে বলে আশা করছি। এতে Sodium Lauryl Sulphate আছে যা ফেনা তৈরি করে, তবে পরিমাণে বেশি হলে ক্ষতিকর হতে পারে। আমার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হয়নি, তাই মাত্রা ঠিকই আছে।
ভালো চুলের ফলাফল পেতে নিয়মিত শ্যাম্পু ব্যবহারের পাশাপাশি চুলের পরিচর্যা, পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ, পর্যাপ্ত পানি পান, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ এবং পর্যাপ্ত ঘুমের অভ্যাস করুন।
- মধু, ডিম, কলা এবং ভিনেগারের হেয়ার প্যাক।
- মেয়নিজ, তেল, গ্লিসারিন এবং ভিটামিন ই ক্যাপসুলের হেয়ার প্যাক।
- অ্যালোভেরার হেয়ার প্যাক।
- মেহেদী পাতা বাটা, টক দই এবং চায়ের লিকারের হেয়ার প্যাক।
- মেথি গুঁড়া, পাকা কলা এবং নারিকেল তেলের হেয়ার প্যাক।
- আমলকির রস এবং নারিকেল তেলের হেয়ার প্যাক।
আপনার চুলের জন্য কোন প্যাকটি সবচেয়ে বেশি উপযোগী তা জানার জন্য একেক সময় একেকটি ব্যবহার করে দেখতে পারেন। যেটি আপনার চুলের সাথে সবচেয়ে মানানসই হবে সেটি নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন।
চুল পড়া বন্ধ করার তেল তৈরি
আমাদের দেশে চুল পড়ার সমস্যা বহুল প্রচলিত, বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে। চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সরিষার তেল ব্যবহার উপকারী হতে পারে। নিয়মিত ব্যবহারে চুলে প্রাকৃতিক জৌলুস আসবে এবং চুল পড়ার সমস্যা কমবে।
সরিষার তেলে থাকা আলফা ফ্যাটি অ্যাসিড চুলকে পুষ্টি দেয় এবং কন্ডিশনারের মতো কার্যকর হয়, যার ফলে চুল দ্রুত বৃদ্ধি পায়। সরিষার তেল চুলে নিয়মিত ব্যবহার করলে ফলিকল মজবুত হবে এবং চুল পড়া রোধ হবে।
সরিষার তেলের মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়ামসহ নানা প্রকার মিনারেল ও ভিটামিন রয়েছে। এতে জিঙ্ক, বিটা ক্যারোটিন ও সেলেনিয়ামও থাকে যা চুলের বৃদ্ধি সহজ করে।
চুল যদি রুক্ষ, শুষ্ক ও নিষ্প্রাণ মনে হয়, তাহলে সরিষার তেল মাথার তালুতে নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন। এতে চুলে উন্নতি দেখা যাবে।
সরিষার তেল হালকা গরম করে চুলের গোড়ায় মাখুন এবং পুরো চুলে লাগান।
এরপর চুলের চারপাশে একটি গরম তোয়ালে পেঁচিয়ে রাখুন ৩০ মিনিটের জন্য।
তারপর ভালোভাবে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
চুলে সরিষার তেল, লেবুর রস ও ধনিয়া গুঁড়া মিশিয়ে লাগান। আধ ঘণ্টা রেখে ভেষজ শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে চুল শক্তিশালী ও খুশকিমুক্ত হবে।
আরো পড়ুনঃ ৭দিনে ফর্সা হওয়ার কারনগুলো জেনে নিন
চুল পড়া বন্ধ করার উপায়
প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ইন্টারনেটে চুল পড়া বন্ধ করার উপায় খোঁজেন, কারণ চুল শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। চুল পড়া বন্ধ করার বিভিন্ন নিয়ম এবং কৌশল ইন্টারনেটে পাওয়া যায়। তবে ইন্টারনেটের অবাধ ব্যবহারের ফলে যে কেউ চুল পড়া বন্ধ করার উপায় নিয়ে বিভিন্ন ধরনের নির্দেশনা দিতে পারেন।
নারিকেল তেল: চুলের গোঁড়ায় নারিকেল তেল মালিশ করলে চুলের স্বাস্থ্য উন্নত হয়। এটি চুলকে পুষ্টি যোগায় এবং চুল পড়া কমায়।
পেঁয়াজের রস: পেঁয়াজের রস চুলের গোঁড়ায় লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে দিন, এরপর ধুয়ে ফেলুন। এতে চুলের গোঁড়া মজবুত হয় এবং চুল পড়া কমে।
মেথির বীজ: মেথির বীজ পানিতে ভিজিয়ে রেখে পেস্ট বানিয়ে চুলের গোড়ায় লাগান। কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন। এটি চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
গ্রিন টি: গ্রিন টি তৈরি করে ঠান্ডা করে চুলের গোড়ায় লাগান। এটি চুলের বৃদ্ধি বৃদ্ধি করে এবং চুল পড়া কমায়।
আমলকী ও রিঠা: আমলকী ও রিঠা পাউডার মিশিয়ে চুলে লাগান। এটি চুলের গোঁড়ায় পুষ্টি দেয় এবং চুল পড়া কমায়।
সুষম খাবার গ্রহণ চুল পড়া বন্ধ করার অন্যতম প্রধান উপায়। মানুষের খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ বেড়েছে, কিন্তু সুষমতা নেই। চুলের জন্য ভিটামিন সি এবং ডি প্রয়োজন, তাই এসব ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার বেশি খেতে হবে। অনেকেই বলেন অতিরিক্ত ভিটামিন ই প্রয়োজন এবং ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু চুলের গঠনে ভিটামিন ই এর ভূমিকা নেই বললেই চলে, সামান্য পরিমাণে ভিটামিন এ প্রয়োজন।
মহিলাদের চুল পড়া বন্ধ করার উপায়
চুলে কেমিক্যালের ব্যবহার বন্ধ করুন। সালফেট ও প্যারাবিনমুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করুন, বিশেষ করে শীতকালে অয়েল বা কন্ডিশনার বেজড শ্যাম্পু বেশি কার্যকর। ঘরোয়া পদ্ধতিতে, আধা কাপ নারকেল তেলে ১ চা চামচ মেথি দিয়ে ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন। ১ ঘণ্টা পর মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
শীতে ভালো পরিমাণে ময়েশ্চারাইজার যুক্ত কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। কেমিক্যালযুক্ত চুলের রং ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন, কারণ এতে চুলের ময়েশ্চারাইজার কমে যায়। এর পরিবর্তে হেনা ব্যবহার করুন। বাড়িতে মেহেদি পাতা বেটে হেনাপ্যাক বানানোর চেষ্টা করুন।
অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করেও আপনি চুলের যত্ন নিতে পারেন। সপ্তাহে দুইদিন অ্যালোভেরার পাতা থেকে জেল সংগ্রহ করে চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত লাগান। ২০ মিনিট পর ভেষজ শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি চুল পড়া বন্ধ করবে এবং চুলকে ঝলমলে করবে।
চুল পড়া বন্ধ করতে পেঁয়াজের রস ব্যবহার খুবই ফলপ্রসূ। পেঁয়াজের রস চুলের গোড়ায় ঘষে লাগান। গন্ধ কমানোর জন্য এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিন। ২০ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। মহিলাদের জন্য এটি চুল পড়া বন্ধের অন্যতম উপায়।
চুল পড়া বন্ধ করার ভিটামিন ই ক্যাপসুল
যত্নের অভাবে চুল খুব সহজেই বিশ্রী হয়ে পড়ে। রুক্ষ, শুষ্ক ও মলিন চুলের সমস্যা দেখা দেয়। নিয়মিত তেল ব্যবহার না করলে চুল তার সৌন্দর্য হারায়। চুলের সৌন্দর্য হারানো মানে আপনার পুরো ব্যক্তিত্বের ওপর প্রভাব পড়া। ভিটামিন ই ক্যাপসুল চুলের সৌন্দর্য পুনরুদ্ধারে অত্যন্ত কার্যকর। এটি ত্বকের যত্নেও সমান উপকারী।
ভিটামিন ই ক্যাপসুলের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট মাথার স্ক্যাল্পের জন্য খুবই স্বাস্থ্যকর। এটি চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, দ্রুত ফল দেয় এবং অতিরিক্ত চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে। চুলের যত্নে এটি অত্যন্ত কার্যকর।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠ গন আপনারা অবশ্যই জানতে পেরেছেন যে কিভাবে চুল গজানো তেল কিভাবে ব্যবহার করতে হয় এবং চুল পড়া বন্ধ হওয়ার যেসব কারণ ইত্যাদি সর্ম্পকে আপনারা জানতে ও বুঝতে পেরেছেন। ধন্যবাদ
0 মন্তব্যসমূহ